Wednesday 30 March 2016

ব্রেকিং নিউজ !! তনু হত্যায় আটক করা হল এক যুবক,, এই সেই উত্ত্যক্তকারী পিয়ার ??

ব্রেকিং নিউজ !! তনু হত্যায় আটক করা হল এক যুবক,, এই সেই উত্ত্যক্তকারী পিয়ার ??


কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডের চার দিন পরও পুলিশ এ মামলায় কোনো অগ্রগতি দেখাতে না পারলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ওই যুবক আটক আছে। নিহত তনুর পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পিয়ার নামের এক যুবক তনুকে উত্ত্যক্ত করত। তবে আটক যুবকটি পিয়ার কি না তা সূত্রগুলো নিশ্চিত করতে পারেনি। পুলিশ দাবি করছে, তারা পিয়ার নামে যুবকের বিষয়ে কিছু জানে না।
অন্যদিকে কুমিল্লা সেনানিবাসে সংঘটিত তনু হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আরো অনেক এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে প্রতিবাদী মানুষ। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এসব প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকারকর্মী এবং সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অসংখ্য মানুষ তনু হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কুমিল্লায় গতকাল তৃতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধসহ ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে ভিক্টোরিয়া কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।
একজন আটকের খবর : তনুর পারিবারিক সূত্র জানায়, পিয়ার নামে একটি যুবক তনুকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। সে কুমিল্লা সেনানিবাসে পরিবারের সঙ্গে থাকে। প্রাইভেট পড়াতে যাওয়ার সময় পিয়ার তাকে উত্ত্যক্ত করত। জানা গেছে, পিয়ার ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া তনুর ফেসবুক আইডি সূত্রে জানা গেছে, একটি মোবাইল ফোন নম্বর থেকে তনুকে বিরক্ত করত অপরিচিত এক যুবক।


নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তনু হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ঢাকায় এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তবে সে যুবকটি পিয়ার কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন কাউকে আটক বা গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করেছেন।


সূত্র জানায়, তনু হত্যার পরদিন গত সোমবার এক যুবককে আটক করে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর থেকে ওই যুবকের আর কোনো খোঁজ নেই। তবে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইনশৃঙ্খলা কোরের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, ডিজিএফআইয়ের ডিজি সাজ্জাদ হোসেন, বিজিবির কমান্ডার লে. কর্নেল মোখলেসুর রহমান, র‌্যাব-১১-এর ক্রাইম প্রিভেনশন কম্পানির কমান্ডার, এনএসআইয়ের জেনারেল ডিরেক্টর মজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘তনু হত্যার বিষয়ে কারো কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো দরকার। আমরা সবার সহযোগিতা চাই।’ এ সময় পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান, তনু হত্যার বিষয়ে এখনো পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমকে দেওয়ার মতো কোনো তথ্য নেই। তিনি বলেন, ‘নিহত তনুকে ফোনে কেউ বিরক্ত করত বলে তাঁর ফেসবুকে যে নম্বর আছে সে সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এ ছাড়া পিয়ার নামের কেউ তাঁকে বিরক্ত করত এমন তথ্যও আমাদের জানা নেই। তাঁর পরিবার আমাদের কিছু জানায়নি।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুমিল্লা সেনানিবাসের ৫৮/১ পাহাড় হাউসে বসবাস করা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাসের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর সঙ্গে সবার সুসম্পর্ক ছিল। ছোট থেকে তিনি বড় হন কুমিল্লা সেনানিবাসেই। সেনানিবাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যোগ দিতেন তিনি। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাঁকে ভালো জানত। ভিক্টোরিয়া কলেজের সবাই তাঁকে পছন্দ করত। তনুর সঙ্গে একই বাড়িতে থাকত তাঁর সমবয়সী চাচাতো বোন নাইজু জাহান। তনুর দীর্ঘদিনের সঙ্গী নাইজু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের স্নাতক শিক্ষার্থী।
নাইজু কালের কণ্ঠ বলেন, ‘সে (তনু) রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কারো দিকে তাকাত না। আমরা তার ঘটনা শুনে বিস্মিত। কারণ আমরা সেনানিবাসে থাকতাম। আমরা এমন কিছু দেখিনি। কিন্তু হঠাৎ এটা কী হলো, কিভাবে হলো, আমরা বুঝতে পারছি না।’ নাইজু জাহান আরো বলেন, “পিয়ার নামে এক ছেলে তাকে বিরক্ত করত। সে পড়াশোনা করে এবং সেনানিবাসেই থাকে। প্রাইভেট পড়াতে যাওয়ার সময় সে প্রায়ই তনুকে বিরক্ত করত। তনু নিজে আমাকে এ কথা বলেছে। একদিন সে রাস্তায় পিয়ারকে দেখিয়ে বলেছিল, ‘এই ছেলেটিই আমাকে ডিস্টার্ব করে’।” তবে পিয়ার সম্পর্কে নাইজু বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে যে তথ্য বের হয়েছে, এর প্রতিবাদ করেন নাইজু। তিনি বলেন, লাশ দেখে তাঁদের মনে হয়নি তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে তনুকে উত্ত্যক্তকারী যুবক পিয়ারের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টায় ৭১ টিভির সরাসরি সম্প্রচারিত টক শোতে কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। টক শোতে অংশ নেন কালের কণ্ঠ’র নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কাশেম হৃদয়ও। সন্দেহভাজন যুবক পিয়ার সম্পর্কে হৃদয় জানতে চাইলে পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন টক শোতে বলেন, পুলিশ পিয়ার সম্পর্কে কিছু জানে না। ওই টক শোতে আরো উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক শ্যামল দত্ত ও কাজী সিরাজ। ওই সময় তনু হত্যার কোনো ক্লু পাওয়া গেছে কি না আবুল কাশেম হৃদয়ের এই প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘এই মামলায় হাইলি কিছু টেকনিক্যাল ব্যাপার আছে। এটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু বলতে পারছি না।’
ঢাকায় প্রতিবাদ : তনু হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে গতকাল শাহবাগে গণসমাবেশ করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, ‘তনু হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগেই রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ দেশে একটি ঘটনা চাপা দিতে নতুন আরেকটি ঘটনার জন্ম দেওয়া হয়। তনুকে ধর্ষণের ঘটনা কি রিজার্ভ চুরির ঘটনাকে চাপা দিতে? এ দেশে চোরের বিচার হয়, ডাকাতের বিচার হয়, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ধর্ষকের বিচার হতে দেখলাম না। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় যারা ধর্ষণ করে তারা কতটা ক্ষমতাবান।’
তনুকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গণজাগরণ মঞ্চের স্বাধীনতা কনসার্ট প্রত্যাহার করেছে সংগঠনটি। গণসমাবেশে আরো বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লাকী আক্তার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রান্টের সভাপতি ইমরান হাবীব রুমন ও ভাস্করা রাশা প্রমুখ।
একই দাবিতে গতকাল বিকেলে প্রতিবাদী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে নারী সংহতি। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীল, সহসভাপতি তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা দেব, সহ-সাধারণ সম্পাদক রেবেকা নীলা, সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল মরিয়ম প্রমুখ।
কুমিল্লা ও অন্যান্য স্থানে প্রতিবাদ : গতকাল বিকেল ৩টা থেকে কুমিল্লা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। এ সময় তনু হত্যার বিচারের দাবিতে মুখরিত ছিল কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরসহ আশপাশের এলাকা। তারা তনুর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানায়। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ চলাকালীন বিপুল পরিমাণ পুলিশকে বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
গতকাল জুমার নামাজের পর সহপাঠীরা মিছিল নিয়ে নগরীর কান্দিরপাড়ে এসে জমা হয়। তনু হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে কান্দিরপাড় এলাকা। শিক্ষার্থীরা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার হাতে তনু হত্যার বিচারের দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করে। এ সময় তারা সড়কের ওপর ড্রাম ফেলে, শুয়ে-বসে অবস্থান নেয়। এতে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী উভয় দিকের যান চলাচল বন্ধ থাকে।
তনু হত্যার বিচার দাবিতে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরে মানববন্ধন তৈরি করা হয়। গতকাল দুপুরে এনায়েতপুর থানার কেজি মোড়ে এনায়েতপুর ছাত্র ফোরামের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধন তৈরি করা হয় নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। জেলা ছাত্র ইউনিয়ন এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। ফরিদপুর শহরে সংস্কৃতিকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে ও হাতে পোস্টার নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শহীদ সাটু হলের সামনে ‘প্রতিবাদ করুন, বাঁচবে হাজারো তনু…ঝরে যাবে না অপ্রস্ফুটিত ফুল’ স্লোগান নিয়ে সাধারণ ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন তৈরি করা হয়। মণিরামপুর পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ চত্ব্বরে গতকাল মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
সেনাবাহিনীর বক্তব্য : এদিকে গত রাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সোহাগী হত্যার কারণ উদ্ঘাটনে সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ২০ মার্চ তারিখ রাত আনুমানিক ১১টায় কুমিল্লা সেনানিবাসের সীমানাসংলগ্ন এলাকায় (এ স্থানে কোনো সীমানা প্রাচীর নেই) সোহাগী জাহান তনুর অচেতন দেহ খুঁজে পান তাঁর বাবা ইয়ার আলী। তিনি মিলিটারি পুলিশকে খবর দেন। তৎক্ষণাৎ সোহাগীকে সিএমএইচে নেওয়া হয় এবং সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ মাধ্যমে তাঁর ময়নাতদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। সোহাগী হত্যার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং সেনাবাহিনী সোহাগী হত্যার কারণ উদ্ঘাটনে পুলিশ ও প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করছে।’
সুত্রঃ কালের কন্ঠ

Tuesday 29 March 2016

দুপুর ঠিক ১২টা নামাজের নিষিদ্ধ সময়- কথাটি সঠিক নাকি ভুল?

এ সময় থেকে পাঁচ মিনিট বিয়োগ করলে দুপুরের নামাযের নিষিদ্ধ সময় হয় এক মৌসুমে সর্বনিম্ন ১১:৩৭ আরেক মৌসুমে সর্বোচ্চ ১২:০৮। সুতরাং নির্দিষ্ট করে ঠিক ১২টাকে দুপুরে নামাযের নিষিদ্ধ সময় মনে করা ঠিক নয়।

দুপুর বেলা সূর্য যখন ঠিক মাথার উপরে থাকে তখন নামায পড়া নিষেধ। অনেকে মনে করে এ সময়টা ঠিক দুপুর ১২টা। এ ধারণা ঠিক নয়।
এ সময়টা হলো সূর্য ঢলার সময়ের পূর্বে আনুমানিক ৫ মিনিট। মৌসুম ভেদে সূর্য ঢলার সময়ের তারতম্যের কারণে এ সময়টিও পরিবর্তিত হতে থাকে। মৌসুমের এই তারতম্যের কারণে সূর্য ঢলার সময়ের মাঝে প্রায় আধ ঘণ্টার ব্যবধান হয়ে থাকে। এক মৌসুমে (ঢাকার সময় অনুযায়ী) সূর্য ঢলার সর্বনিম্ন সময় ১১:৪২ তো আরেক মৌসুমে সর্বোচ্চ ১২:১৩।
এ সময় থেকে পাঁচ মিনিট বিয়োগ করলে দুপুরের নামাযের নিষিদ্ধ সময় হয় এক মৌসুমে সর্বনিম্ন ১১:৩৭ আরেক মৌসুমে সর্বোচ্চ ১২:০৮। সুতরাং নির্দিষ্ট করে ঠিক ১২টাকে দুপুরে নামাযের নিষিদ্ধ সময় মনে করা ঠিক নয়।
মোটকথা, সূর্য ঢলার সময় যখনই হবে তার পূর্বের পাঁচ মিনিটই হলো দুপুরে নামাযের নিষিদ্ধ সময়।
সংকলন ও গ্রন্থনা : মাওলানা মনযূরুল হক
সৌজন্যে : মাসিক আল-কাউসার

Saturday 2 January 2016

ফলের চেয়েও ভালো শাকসবজি!

ফল ও শাকসবজি খাওয়া যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তা আমরা সবাইই জানি। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি বেশি ফল খাওয়ার চেয়ে বেশি বেশি শাকসবজি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশি ভালো। সম্ভবত ফলে ‘সুগার’ বা শর্করার পরিমাণ বেশি হওয়ায় এমনটা হতে পারে। এ ছাড়া টিনজাত ফলের রস খাওয়ায় তেমন একটা উপকার পাওয়া যায় না বলেও জানিয়েছেন গবেষকেরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে কীভাবে ফল ও শাকসবজি খাওয়া স্বাস্থ্যবান থাকতে সহায়তা করতে পারে।

ইউরোপীয়দের মতো নাশতা করলে সকাল শুরু করতে পারেন একটা ডিমের ওমলেট আর বেশি পরিমাণে ‘স্পিনাচ’ বা পালংশাক-জাতীয় শাক দিয়ে। ডিমের প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ আপনাকে শক্তি জোগাবে। আর এই জাতীয় শাকের ‘ফোলেট’ ও ‘বিটাইন’ ভিটামিন শরীরের ‘হোমোসিস্টাইন’-এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হূদেরাগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। শাকের বিকল্প হিসেবে আপনি কিছু স্ট্রবেরি বা ব্লুবরি কিংবা একটা কমলা খেয়ে ফেলতে পারেন।
দুপুর ও রাতের খাবারে সবজি খেতে পারেন। আর ডেজার্ট হিসেবে খেতে পারেন ফল। কিন্তু কোন কোন সবজি খাবেন? গবেষকেরা বলছেন, যতটা সম্ভব নানান রঙের সবজি খান। নানান রঙের শাকসবজিতে এই রংগুলো আসলে হাজারো জৈব-যৌগিক রাসায়নিকের প্রতিনিধিত্বকারী। এসব ‘সাইটোকেমিক্যালস’ গাছ-লতা-পাতাকে সজীব ও স্বাস্থ্যবান রাখে। বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন, এসব শাকসবজি খেতে হবে খুবই হালকা সেদ্ধ করে, পুরোপুরি সেদ্ধ করে এগুলো মেরে ফেলে না।

সবুজ

সবুজ পাতার শাকসবজি যেমন—পালংশাক, লেটুসপাতা ইত্যাদি ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও পটাশিয়ামের মতো সমৃদ্ধ খনিজের উত্স। বাঁধাকপি, ফুলকপি ও ব্রকোলি (বিশেষ জাতের ফুলকপি) জাতীয় সবজিগুলোয় সালফার ও অর্গানোসালফার আছে। সালফারে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। এ ছাড়া মেথিওনিন ও টরিনের মতো প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে এতে।

হলুদ ও কমলা

হলুদ ও কমলা রঙের ফল ও শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ‘ক্যারোটিনয়েডস’ আছে। ক্যারোটস বা গাজর এই উপাদানে সমৃদ্ধ খাবারের একটা ভালো নমুনা। গাজর  ভিটামিন ‘এ’-এর একটি ভালো উত্স। এই ভিটামিন ‘এ’ দৃষ্টিশক্তির জন্য খুবই ভালো। বেশি বেশি গাজর খান, চোখ ভালো রাখুন। শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ঠিক রাখতে এবং হাড়ের বৃদ্ধিতেও ভিটামিন ‘এ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তরমুজ, টমেটো, মরিচ, লাউ ও কুমড়ো-জাতীয় ফলেও প্রচুর ক্যারোটিনয়েডস আছে।

লাল

আরেক জাতের ক্যারোটিনয়েডস আছে লাল রঙের। একে বলে ‘লাইসোপিন’। লাল টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে আছে এই লাইসোপিন। অন্যান্য সবজি ও ফলের সঙ্গে এর একটা পার্থক্য হলো টমেটো রেঁধে খেলেও এর লাইসোপিন কমে না, বরং বেড়ে যায়। তবে রান্না করা টমেটোতে ভিটামিন ‘সি’ নষ্ট হয়ে যায়।

নীল ও নীলাভ বেগুনি

নীল ও নীলাভ বেগুনি ফল ও সবজি এই রং পেয়ে থাকে ‘অ্যান্থোসায়ানিন’ নামের একটা রাসায়নিকের কারণে। ব্ল্যাকবেরি ও ব্লুবেরি, নীলচে গাজর এবং লাল বাঁধাকপিতে এটা প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে যে বয়স বেড়ে গেলে স্মৃতিশক্তি ঠিক রাখা এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ঠিক রাখতে সহায়তা করতে পারে অ্যানথোসায়ানিন-সমৃদ্ধ ব্লুবেরি।

সাদা

রসুন ও পেঁয়াজ ‘অ্যালিল সালফার’সমৃদ্ধ। রসুন হূদেরাগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকর। এ ছাড়া এগুলো ক্ষতিকর উদ্ভিজ্জাণু মেরে ফেলে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শাকসবজি

ছয়টি মুখ্য খাদ্য উপাদানের মধ্যে বর্তমান প্রেক্ষাপটে শাকসবজি ও ফলমূলের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ এ ধরনের খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খাদ্য লবণ, পানি, শর্করা ও কিছু প্রোটিন বিদ্যমান থাকে। শাকসবজি ও ফলমূলে স্টার্চ ও সেলোলুজ জাতীয় উপাদান প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকায় এসব খাদ্যবস্তু গ্রহণের ফলে কম ক্যালরি গ্রহণের মাধ্যমে উদরপূর্তি হয়, মানে আপনি পেট ভরে খাওয়ার পরও আপনার ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা সর্বনিম্ন পর্যায়ে থেকে যায়। ক্যালরি কম গ্রহণ করলে মানুষের ওজন বৃদ্ধি ঘটে না এবং যারা মেদভুঁড়িজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন তারা শারীরিক ওজন কমানোর জন্য শাকসবজি ও ফলমূল প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করে লাভবান হতে পারবেন। শাকসবজিতে বিদ্যমান সেলোলুজ মানব পরিপাকতন্ত্রে হজম হতে না পারায়, তা থেকে কোনো রূপ ক্যালরি দেহে প্রবেশ না করার ফলে খাদ্যের মাধ্যমে ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা রহিত করা যায়। হজম না হওয়া সেলোলুজ মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, মলে পানি ধরে রাখতে পারে, যার পরিপ্রেক্ষিতে মল নরম থাকে। সুতরাং যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন তাদের প্রতিবেলা প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল গ্রহণ করে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও রেহাই পেতে পারেন। যারা উচ্চরক্তচাপজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন তারা শাকসবজি ও ফলমূল প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করে খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে একটি পর্যায় পর্যন্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। বর্তমান বিশ্বে বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশে হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব অনেক গুণে বৃদ্ধি ঘটেছে। এর জন্য প্রধানত উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলকে দায়ী করা হয়ে থাকে। অধিক পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল গ্রহণের ফলে খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণকৃত কোলেস্টেরলের হজম ও শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আগেই বলেছি, শাকসবজি ও ফলমূল অধিক পরিমাণে গ্রহণের ফলে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমে যায়। সুতরাং বেশি পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল গ্রহণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদরোগও প্রতিরোধ করা সম্ভব। অধিক পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল গ্রহণের ফলে পেটে গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে এবং দিনে ২-৩ বার টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, তবে কোষ্ঠকাঠিন্য অবশ্যই দূরীভূত হবে এবং কারও মলদারে অর্শ, গেজ বা পাইলস থাকলে তারও প্রতিকার হবে। তবে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা দিনে দিনে কমে যেতে পারে। অনেক শাকসবজি ও ফলমূলে ভিটামিন 'এ' জাতীয় উপাদান বিদ্যমান থাকায় চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে, রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। বেশ কিছু শাকসবজি ও ফলমূলে প্রচুর পরিমাণ আয়রন বিদ্যমান থাকায় এসব খাদ্যবস্তু গ্রহণের ফলে রক্তশূন্যতা দূরীভূত হয়। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং যারা কম ক্যালরি গ্রহণের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তারা এসব কার্বোহাইড্রেটযুক্ত শাকসবজি ও ফলমূল অবশ্যই বর্জন করবেন। আলু, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, কচুরমুখী, কাঁঠালের বিচি ইত্যাদি খাদ্যে বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান থাকে। সব ধরনের মিষ্টি ফলে অধিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান থাকে। যেমন- পাকা আম, কাঁঠাল, পাকা কলা, পাকা পেঁপে, লিচু, তরমুজ, আনারস, বাঙি, আপেল, আতা, সফেদা, আঙ্গুর ইত্যাদি। ডায়াবেটিস রোগী এবং যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তারা এসব সবজি ও ফল বর্জন করবেন।

ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাবর রোড, শ্যামলী।

- See more at: http://www.bd-pratidin.com/health/2015/07/25/95433#sthash.D5TRvUPo.dpuf

আমাশয় থেকে স্থায়ী মুক্তি লাভের উপায়

আমাশয় হচ্ছে একটি ইন্টেসটেনাইল প্রদাহ যা আমাদের কোলনে হয়ে থাকে। আমাশয় আক্রান্ত রোগী মারাত্মক ডাইরিয়ায় ভুগতে পারে সাথে মিউকাস ও রক্তপাতও ঘটতে পারে। এছাড়া রুগীর তল পেটে প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভূত হয়। যদি আক্রান্ত ব্যাক্তি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করে তবে তার জীবন ঝুকিতে পড়তে পারে। ব্রেকিংনিউজের পাঠকদের জন্য আমাশয় থেকে স্থায়ী মুক্তি লাভের উপায়গুলো দেয়া হল।

১. বাসী ও পচা খাবার খাওয়া যাবে না।
২. সময় পরিস্কার পরিচ্ছিন্ন থাকতে হবে।
৩. টয়লেটের পরিবেশ উন্নত করতে হবে বা স্বাস্থ্যসম্মত স্যানেটারি ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. প্রতিবার খাবার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
৫. টয়লেট থেকে ফিরে সাবান ব্যবহার করতে হবে।
৬. যারা পাবলিক যানবাহনে চলাফেরা করেন তারা অফিসে গিয়ে এবং অফিস থেকে বাসায় ফিয়ে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নেবেন।
৭. বাইরের খাবার এড়িয়ে যাওয়া ভাল, কিন্তু বাইরের পানি অবশ্যই খাওয়া যাবে না।

অপ্রত্যাশিত যৌন মিলনে নারীদের বেশি ক্ষতি!

বিয়ের আগে যৌন মিলনের জন্য সব ধর্মেই নিষেধ আছে। তারপরও অবাধে চলছে অপ্রত্যাশিত যৌন মিলন।

বর্তমানে অনেক উঠতি বয়সী মেয়েরা এ ধরনের শারীরিক সম্পর্ককে আধুনিকতা মনে করে থাকে। অথচ বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের ফলে যে সমস্যা দেখা দেয় তা পোহাতে হয় নারীদেরকেই। তাই সাবধান হোন এবং জেনে নিন অনাকাঙ্খিত সমস্যাগুলো সম্পর্কে।

অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ:
বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের সবচেয়ে ভয়াবহ যে সমস্যাটি হতে পারে তা হলো অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ। নিরোধক ব্যবহারের পূর্ব পরিকল্পনা না থাকা, আবেগের বশে হঠাৎ করেই যৌন সম্পর্ক করা ইত্যাদি এর অন্যতম কারণ। শারীরিক সম্পর্কের চিহ্ন ধারণ করে সাধারণত মেয়েরাই। কোনো মেয়ের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে কি না তা ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যায়, কিন্তু ছেলেদের যায় না। একইভাবে গর্ভধারণের যাবতীয় সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয় শুধু মেয়েদেরই।

ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাত :
বিয়ের আগে গর্ভধারণ করে ফেললে তখন গর্ভপাত করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। গর্ভপাত একটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রক্রিয়া। এতে যেমন শারীরিক ক্ষতি হয় তেমনি মানসিক ক্ষতির সম্মুখীনও হতে হয়। গর্ভপাতের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এর দীর্ঘমেয়াদী কুফলও রয়েছে। যেমন পরবর্তীতে গর্ভধারণে সমস্যা হওয়া বা গর্ভধারণ করতে না পারা ইত্যাদি। প্রথম সন্তান জন্মদানের আগে গর্ভপাতের ঘটনা ঘটলে পরবর্তীতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সন্তান ধারনে সমস্যা দেখা দেয়। গর্ভপাতের মানসিক ক্ষতিও কম নয়। সন্তান হারিয়ে অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এমনকি অনেকে বিকারগ্রস্ত পর্যন্ত হয়ে পড়ে।

জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল ও অন্যান্য ঝুঁকি :
বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের কারণে অনেকেই জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন। অনবরত জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল গ্রহণ অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ রোধ করলেও ডেকে আনতে পারে মারাত্মক সব সমস্যা। এর মধ্যে অন্যতম হলো সন্তান ধারণের ক্ষমতা হারানো। প্রথম সন্তান জন্মের আগেই দীর্ঘদিন পিল গ্রহণের ফলে পরবর্তীতে গর্ভধারণে ঝুঁকি হতে পারে, হতে পারে বারবার গর্ভপাতের সমস্যা। এছাড়া হরমোনের সমস্যা, মুটিয়ে যাওয়া, খাবারে অনীহা, সন্তান উৎপাদনে অক্ষম হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

0

বড় গুণের বরই

বরই, বড়ই বা কুল আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটা ফল। যদিও এর আদি নিবাস আফ্রিকা, তবু বাংলাদেশে তো বটেই এটি পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় বহুল পরিচিত একটি ফল। মজার ব্যাপার হলো বরই-এর সরাসরি কোনো ইংরেজি নাম নেই!

তবে সাধারণত একে Jujube বা Chinese date নামে ডাকা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ziziphus zizyphus। আমাদের দেশে ডিম্বাকার বরইকে সাধারণত ‘কুল বরই’ বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Zizyphus mauritiana।

বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই, সব ধরনের মাটিতে বরই গাছ জন্মে। বরই গাছ ছোট থেকে মাঝারি আকারের ঝাঁকড়া ধরনের বৃক্ষ। বরই গাছ সাধারণত ১২-১৩ মিটার লম্বা হয়। এই গাছ পত্রঝরা স্বভাবের অর্থাত্‍ শীতকালে পাতা ঝরে এবং বসন্তকালে নতুন পাতা গজায়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফল ধরে শীতকালে। কাঁচা ফল সবুজ।

তবে পাকলে হলুদ থেকে লাল রং ধারণ করে। কাঁচা ও পাকা দু ধরনের বরই-ই খাওয়া যায়। স্বাদ টক ও টক-মিষ্টি ধরনের। তবে কুল বরই মিষ্টি হয়। বরই শুকিয়ে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। কাঁচা ও শুকনো বরই দিয়ে চমত্‍কার চাটনি ও আচার তৈরি করা যায়।

বরইয়ের রয়েছে ব্যাপক পুষ্টিগুণ। প্রতি ১০০ গ্রাম বরইয়ে রয়েছে :

খাদ্যশক্তি- ৭৯ কিলোক্যালরি
শর্করা- ২০.২৩ গ্রাম
চর্বি- ০.২ গ্রাম
আমিষ- ১.২ গ্রাম
জলীয় অংশ- ৭৭.৮৬ গ্রাম
ভিটামিন এ- ৪০ আইইউ
থায়ামিন- ০.০২ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাভিন ০.০৪ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ০.৯ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬- ০.০৮১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি- ৬৯ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম- ২১ মিলিগ্রাম
আয়রন- ০.৪৮ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম- ১০ মিলিগ্রাম
ম্যাংগানিজ- ০.০৮৪ মিলিগ্রাম
ফসফরাস- ২৩ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম- ২৫০ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম- ৩ মিলিগ্রাম
জিংক- ০.০৫ মিলিগ্রাম
পুষ্টিগুণ ছাড়াও বরইয়ের রয়েছে অনেক রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। যেমন :

বরইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। বরইয়ের ভিটামিন সি ইনফেকশনজনিত রোগ যেমন টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঘা, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া ইত্যাদি দূর করে।
বরইয়ের রসকে অ্যান্টি-ক্যান্সার হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ফলের রয়েছে ক্যান্সার কোষ, টিউমার কোষ ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ ক্ষমতা।
যকৃতের নানা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে বরই। এই ফল যকৃতের কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
বরই অত্যন্ত চমত্‍কার একটি রক্ত বিশুদ্ধকারক। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বরই খুবই উপকারী ফল।
ডায়রিয়া, ক্রমাগত মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তশূন্যতা, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি রোগ খুব দ্রুত সারিয়ে তোলে এই ফল।
মৌসুমি জ্বর, সর্দি-কাশিও প্রতিরোধ করে বরই। এছাড়া হজম শক্তি বৃদ্ধি ও খাবারে রুচি বাড়িয়ে তোলে এ ফল।