Saturday 2 January 2016

ডুমুর খাওয়া কেন ভালো আপনার জন্য?

অবহেলিত একটি ফল ডুমুর। ডুমুর খাওয়া হয় তরকারি হিসেবেও। ডুমুর খান আর না খান, ‘ডুমুরের ফুল’ বাগধারার কল্যাণে ডুমুরের নাম জানা সবারই। আজ জেনে নিন ডুমুরের কিছু উপকারিতার কথা।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ডুমুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত ফল ও সবজি খাওয়ার অভ্যাস না থাকলেও প্রায়ই আমরা প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়ে থাকি। এসব প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণ মানে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে।

ডায়েটে পটাশিয়ামের পরিমাণ কমে গিয়ে সোডিয়ামের পরিমাণ গেলে হাইপারটেনশনের সমস্যা হতে পারে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, যারা স্ন্যাকস ও মিষ্টির পরিবর্তে ফল, সবজি ও লো ফ্যাট ডেইরি খাবার খান, তাদের ডায়েটে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে
খাদ্যআঁশ সমৃদ্ধ ডুমুর ওজন কমাতে সাহায্য করে। যদি ওজন নিয়ন্ত্রণ আপনার উদ্দেশ্য হয় তাহলে খাদ্যতালিকায় ডুমুর রাখুন। ডুমুরে উপস্থিত পেকটিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

ডায়াবেটিসের সমস্যায় উপকারী
ডুমুরের সাথে সাথে ডুমুরের পাতাও সমান উপকারী। ডুমুরের পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক উপাদান। অনেক সময় ডায়াবেটিসের রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয়।

গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, ডুমুর এই ইনসুলিন গ্রহণের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডুমুরের পাতার রস সকালের নাশতায় খেতে পারেন। ইনসুলিনের ওপর নির্ভরশীল ডায়াবেটিক রোগীর জন্য ডুমুর খুবই উপকারী।

মেনোপজ পরবর্তী পর্যায়ের জন্য উপকারী
গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, মেনোপজ পরবর্তী পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে ডুমুর সাহায্য করে। খাদ্যআঁশ সমৃদ্ধ ডুমুর খাদ্যতালিকায় রাখার ফলে ৩৪% নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম দেখা দিয়েছে।

মেনোপজ পরবর্তী পর্যায়ে যেসব নারীরা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতি নেওয়ার সাথে সাথে ডায়েটে সিরিয়াল ফাইবার রেখেছেন, তাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% কম দেখা গিয়েছে। আঁশসমৃদ্ধ ফল বেছে নেয়ার সময় হোল গ্রিন ফুড যেমন আপেল, ডুমুর, খেজুর বেছে নিন।

হাড় বৃদ্ধিতে সহায়ক
ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। নিয়মিত অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার খেলে প্রস্রাবের মধ্যে দিয়ে ক্যালসিয়াম বের হয়ে যায়। ক্যালসিয়ামের এই লস প্রতিরোধ করতে ডুমুরের পটাশিয়াম সাহায্য করে। এই ভাবে ডুমুর হাড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

হৃদপিণ্ড ভালো রাখে
গবেষণায় জানা গিয়েছে যে, ডুমুর ও ডুমুরের পাতা ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে হার্ট ভালো থাকে। এ ছাড়া ডুমুরে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ম্যাংগানিজ। খাদ্যতালিকায় ডুমুর রাখার চেষ্টা করুন। কারণ বয়সজনিত কারণে নানা অসুস্থতা প্রতিরোধ করতে ডুমুর সাহায্য করে।

অন্যান্য উপকারিতা
ডুমুরে পানির পরিমাণ বেশি থাকার কারণে থেঁতো করা ডুমুর ত্বক পরিষ্কার করার জন্য বিশেষ করে ব্রণ সারানোর জন্য সাহায্য করে। যাদের দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে অ্যালার্জি রয়েছে তাদের জন্য ডুমুর উপকারী।

কারণ ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। পেটের সমস্যা দূর করতে ডুমুর খুব ভালো কাজ করে। দুর্বলতায় ভোগেন এরকম ব্যক্তির জন্য ডুমুর উপকারী। বিশেষ করে মুখ, জিভ বা ঠোঁট ফাটার সমস্যা ভীষণভাবে থাকলে তা নিরাময় করতে ডুমুর সাহায্য করে। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যায় ডুমুর উপকারী।

No comments:

Post a Comment